,

গোপালগঞ্জে কবরস্থান প্রভাবশালীর স্কুল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জে কবরস্থানের জায়গা দখল করে কিন্ডার গার্টেন স্কুল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।

সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের পশ্চিম নিজড়া গ্রামের সরদারপাড়া জাঙ্গাল কবরস্থানের জায়গা দখল করে রেণুকা কিন্ডার গার্টেন স্কুল করা হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র ১শ’ গজ এলাকার মধ্যে কিন্ডার গার্টেনটির অবস্থান। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ২৬ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানো হয়। এ স্কুলের আড়ালে অবৈধ কোচিং বাণিজ্য চলছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ওই গ্রামের প্রভাবশালী ও পুলিশের এস.আই শফিকুল ইসলাম সরদার (বদর) প্রায় ১৭ বছর আগে কবরস্থানের জায়গা দখল করে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে স্কুলের সাইনবোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছে।

কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটি বারবার কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেও দখলদার কবরস্থানের জায়গা ছাড়েনি।

কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন মিনা বলেন, ‘স্কুলের অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতা পুলিশের এসআই শফিকুল ইসলাম সরদার। তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাকে কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি প্রভাব খাটিয়ে কবরস্থানের জায়গা দখলে রেখে স্কুল পরিচালনা করে আসছেন। প্রায় ৩ বছর আগে কবরস্থান কমিটির পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর কবরস্থানের জায়গা থেকে স্কুলটি উচ্ছেদের আবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা স্কুল সরিয়ে নেয়ার কথা বললে, স্কুল কর্তৃপক্ষ বারবার সময় চেয়েছে। এ কারণে স্কুল ছড়িয়ে নিতে তারা কালক্ষেপন করছেন। বারবার সময় নিয়েও তারা স্কুল সরিয়ে নেয়নি।

রেণুকা কিন্ডার গার্টেনের সহকারী শিক্ষক জয়ন্তী হীরা কবরস্থানের জায়গায় স্কুল গড়ে উঠার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘স্কুলটি ভেঙ্গে দিলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত হবে। তাই সেটি বিবেচনায় রেখে কাজ করতে অনুরোধ করছি।’

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম সরদার (বদর) বলেন, ‘কবরস্থানের জায়গা দখল মুক্ত হোক এটা আমি চাই। কিন্তু নিজড়া স্কুলের মধ্যে আমার জায়গা রয়েছে। সেখানে আমি ২০ বছর আগে স্কুল করতে চেয়েছিলাম। স্কুলের জায়গায় স্কুল করা যাবে না, এ অজুহাতে গ্রামবাসী বসে সে সময় আমাকে কবরস্থানের ডোবার মধ্যে স্কুল করার অনুমতি দেন। সেখানে আমি মাটি ফেলে ভিটা উচু করে স্কুল প্রতিষ্ঠা করি। এখন কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ এসেছে, আমি জায়গা ছেড়ে দেব। কিন্তু গ্রামবাসীর সেটা ঠিক করে দিতে হবে। তারা যেখানে জায়গা দেবে সেখানেই আমি স্কুল নিয়ে যাব।’

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান খান বলেন, ‘তদন্তে গিয়ে কবরস্থানের জায়গা কিন্ডার গার্ডেনের দখলে রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন স্কুলকে কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। স্কুলের সেশন রয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনসহ আরো অন্যান্য বিষয় স্কুলের সাথে জড়িত রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবে কোন অবস্থাতেই কবরস্থানের জায়গায় স্কুল থাকতে পারবে না।

এই বিভাগের আরও খবর